সৌদি, কাতার, কুয়েত, মালদ্বীপ ও ইউরোপে প্রবাসীরা কেমন আছে

ছবি - সংগৃহীত

  • সাকিব ফারহান
  • ২২ এপ্রিল ২০২০, ১২:৩৫

প্রবাসীরা বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান প্রানশক্তি। তাদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রায় বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা গতি পায়। করোনা প্রভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসীরা এখন কঠিন সময় পার করছেন। অনেকে দেশে ফিরে এসেছেন । তারা আবার ফিরে যেতে পারেবন কিনা তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে যারা এখনও বিদেশে আছেন তাদের অনেকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুকিতে আছেন। বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গনমাধ্যমে প্রবাসীদের দুরবস্থার নানা খবর আসছে।

করোনায় বিশ্বময় ছড়িয়ে থাকা প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশির জীবন-জীবিকা আজ হুমকির মুখে। ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশে থাকা অন্তত ১৬৫ বাংলাদেশির প্রান কেড়ে নিয়েছে সর্বনাশা করোনা। বাংলাদেশের বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশি কমিউনিটির কাছ থেকে পাওয়া গেছে এসব মৃত্যুর খবর। করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে । সেখানে ১০০ জন মারা গেছে। এরপর বৃটেনে মারা গেছে ৪১ জন। ইতালিতে ৭ জন। কানাডায় ৪ জন। কাতারে ২জন, সৌদি আরবে এক চিকিৎসকসহ ৭ জন, স্পেন, সুইডেন , লিবিয়ায় এবং গাম্বিয়ায় ১জন বাংলাদেশি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এরপরও অনেক প্রবাসী অবস্থান করছেন। দুনিয়ার প্রায় সব দেশ লকডাউন ঘোষণার পর সবাইকে থাকতে হচ্ছে ঘরের মধ্যে। হাতে কোনো কাজ নেই। আবার অনেকে আছে কোয়ারাইন্টন সেন্টারে। এরমধ্যে খবর এসেছে প্রবাসীদের ফেরত আনার জন্য সরকারের ওপর বিভিন্ন দেশ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর মধ্যে তিন উপসাগরীয় দেশ বাহরাইন, কাতার ও কুয়েত সরকার জানিয়েছে, তারা প্রায় ৩৮ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে চায়। একইসঙ্গে সিঙ্গাপুর, কোরিয়া ও মালদ্বীপ থেকেও অভিবাসী ফেরত নেয়ার চাপ বাড়ছে বাংলাদেশ সরকারের উপর।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বেশ কিছুদিন ধরে অনিয়মিত ও বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাবাস্ত্য বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এখন এই চাপ আরো বাড়বে। কারন এসব দেশে কাজ করার সুযোগ নেই। এক তথ্যে দেখা গেছে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এ এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশী বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। এর মধ্যে শ্রমিক আছেন প্রায় ৫ লাখ। এদের মধ্যে মার্চের প্রথম ২০ দিনেই এসেছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রবাসী রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। এরমধ্যে সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী রয়েছে। কিন্তু এ সংখ্যা কত তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে ১৫ লাখের কাছাকাছি বলে ধারনা করা হয়। এছাড়া কাতার, সংযুক্ত আরব আসিরাত, বাহরাইন, ওমান ও কুয়েতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি বসবাস করেন। আসুন দেখে নেই এসব দেশে প্রবাসীরা এখন কী অবস্থায় আছে।

সৌদি আরবে এখন পুরোপুরি ভাবে লকডাউন চলছে। মক্কা, মদীনা, জেদ্দাসহ বেশ কিছু শহরে জারি করা হয়েছে কারফিউ। ফলে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বিদেশি যার সেখানে কাজের জন্য গেছেন তাদের কোনা কাজ নেই। অনেক নিয়োগ কর্তা বন্ধ সময়ে বেতন দেবেন কিনা তা নিশ্চিত নয়। করোনা ভাইরাসের প্রকোপের আগে থেকে সৌদি আরবে অনিয়মিত শ্রমিকদের ধরপাকড় চলছিলো। পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই প্রক্রিয়া আরো বাড়তে পারে। এছাড়া সৌদি অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তাতে বহু শ্রমিক ছাটাইয়ের শিকার হতে পারেন। অবশ্য ওমান, বাহরাইনসহ কয়েকটি দেশের বেসরকারি নিয়োগকর্তার এমন আশ্বাস দিয়েছেন যে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেয়া ও ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে।
এরপরও স্বস্তিতে নেই প্রবাসীরা। তাদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে একসঙ্গে অনেক শ্রমিক কর্মস্থলে ফিরে যেতে উড়োজাহাজের টিকিটের খোঁজ করবেন। ফলে চাহিদা বেড়ে সে সময় দাম বাড়তে পারে টিকিটের। ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় অর্থনৈতিক মন্দা হলে অনেক প্রতিষ্টান কম জনবল নিয়ে কাজ চালাতে চাইবে। ফলে প্রবাসীদের চাকরির ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যে আরেক শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ কাতারে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছে। এরমধ্যে দেশটিতে ৫ শতাধিক বাংলাদেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর এসেছে। দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাতারে এ পর্যন্ত ৩ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। কাতার কতৃপক্ষ লকডাউন এলাকায় শ্রমিকদের খাবার দিচ্ছেন। কিন্তু শ্রমিকদের যেসব স্থানে রাখা হয়েছে সেখানকার পরিবেশ ভালো নয় বলে আর্ন্তজাতিক গনমাধ্যমে এসেছে। ৩ থেকে ৪ হাজারের মত বাংলাদেশি লকডাউন এলাকায় রয়েছেন। তারা বেশ অর্থকষ্টে আছেন। তাদের কাজ নেই, পয়সাও নেই। অবশ্য কাতার চ্যারিটি এবং রেড ক্রিসেন্ট কিছু এলাকায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছাচ্ছে। এছাড়া ইরাক, লেবানন ও কুয়েতে কর্মহীন হয়ে বাংলাদেশিরা নানা সঙ্কটের মধ্যে আছেন।
মধ্যপ্রাচ্যের পর বাংলাদেশি প্রবাসীদের বড় অবস্থান হচ্ছে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর। মালয়েশিয়ায় করেনা নিয়ন্ত্রনে বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু পুরোপুরি ভাবে দেশটি সচল নয়। ফলে যারা শ্রমিক হিসাবে কাজ করছেন তাদের অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অনেকে রয়েছে আর্থিক কষ্টে। এরমধ্যে সিঙ্গাপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

সিঙ্গাপুরে রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশির করোনা শনাক্ত হয়েছে। সিঙ্গাপুরে ‘সার্কিটব্রেকার কর্মসূচি’র আওতায় দেশটির সব ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকলেও বাংলাদেশিসহ বিদেশি শ্রমিকদের সম্পূর্ণ বেতনসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা বহাল রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তাছাড়া সকল শ্রমিককে বিনামূল্যে খাবার ও চিকিৎসা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে । ১১ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে কোভিড -১৯ সংক্রমনের ১৯১ নতুন কেস শনাক্ত হওয়ার কথা জানায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। এর মধ্যে ৯৯ জনই বাংলাদেশি। সিঙ্গাপুরে ৫০০ বেশি বাংলাদেশি করেনায় আক্রান্ত হয়েছে। প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে সুস্থ কর্মীদের আলাদা করে রাখার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে সিঙ্গাপুর সরকার। সেনাক্যাম্প, ভাসমান হোটেল বা খালি থাকা অন্য কোনো স্থাপনায় সুস্থ কর্মীদের স্থানান্তর করা হবে।

সিঙ্গাপুরের উন্নয়নমন্ত্রী লরেন্স উংয়ের বরাত দিয়ে স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, বিভিন্ন ডরমেটরিতে প্রবাসী কর্মীদের সংখ্যা কমানো এবং কভিড-১৯ প্রার্দুভাব প্রশমনে গৃহীত ব্যবস্থাকে কার্যকর করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। মন্ত্রী বলেছেন, গত সপ্তাহে বেশ কয়েকটি ডরমেটরিতে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর প্রবাসী সুস্থ কর্মীদের আলাদা করে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাদের সেনাক্যাম্প, ভাসমান হোটেল, হাউজিং বোর্ডের খালি ফ্ল্যাট এবং চাঙ্গি এক্সিবিশিন সেন্টারে রাখা হবে।
তিনি আরো বলেন, সিঙ্গাপুরকে এখন দুই ধরনের সংক্রমণ বিস্তার নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এর মধ্যে প্রবাসী কর্মীদের ডরমেটরিতে দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে। তবে অন্য কমিউনিটিতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি অধ্যুষিত প্রজেক্ট গ্লোরির কাছে মোস্তফা সেন্টার এবং আরো পাঁচটি ডরমেটরিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরপরই ডরমেটরির সুস্থ কর্মীদের আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে যেসব কর্মী গুরুত্বপূর্ণ সেবা কাজে জড়িত তাদের সংক্রমণ থেকে নিরাপদ রাখার ব্যবস্থা করা হবে।

প্রবাসীদের জন্য বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে কর্মহীনতা। করোনা ভাইরাসের কারনে অনেক দেশে বেড়ে গেছে জীবন যাত্রার ব্যয়। শ্রমিকরা কাজ না পাওয়ায় হাতে থাকছে না নগদ অর্থ। ফলে অনেকে পড়েছেন খাওয়ার সঙ্কটে। এমন পরিস্থিতিতে বিপদে আছেন মালদ্বীপের বাংলাদেশিরা। পর্যটন নির্ভর দেশটিতে পানিসহ সব ধরনের খাবার বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। বহু বাংলাদেশি সেখানে অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে আছেন
মালদ্বীপে অবৈধ বা অনিয়মিত অর্ধ লক্ষাধিক বাংলাদেশি সম্পূর্ণ বেকার। হাতে খাবার কেনার পয়সা পর্যন্ত নেই। এরমধ্যে মালদ্বীপ সরকার চাইছেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের যেনো ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু বাংলাদেশিদের খাবার সংগ্রহ করা এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ, ডিম সহ মোট ৮৫ টন খাদ্য সামগ্রী মালদ্বীপে পাঠাতে একটি আদেশ জারি করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

দূতাবাস থেকে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করা হলেও তা অপ্রতুল। কারন বিপুল সংখ্যক মানুষের খাবার সংস্থান করা সহজ নয়। মালদ্বীপ সরকার অবৈধ বিদেশিদের নিজ নিজ দেশে ফেরাত ফেরাতে চাপ দিচ্ছে বহুদিন ধরে। এখন এই চাপ আরো জোরলো হচ্ছে। মালদ্বীপের মতো খারাপ পরিস্থিতিতে অন্য দেশের প্রবাসীদের এখনো পড়তে হয়নি। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশেগুলোতে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে সে দেশের সরকার। মালদ্বীপে রীতিমত ত্রাহী অবস্থা। আগামি দিনে মালদ্বীপের শ্রমবাজার নিয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে ভাবতে হবে।

ইউরোপ ও আমেরিকার প্রবাসীরাও আছেন নানা সঙ্কটের মধ্যে। সবেচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে। এখনও ঝুকির মধ্যে রয়েছেন এই দুই দেশের প্রবাসীরা। বৃটেনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

ইউরোপের করেনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ইতালি। দেশটিতে বহু বাংলাদেশি কর্মরত ছিলেন। এদেরে বেশিরভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ছিলেন। তাদের বেশিরভাগ দেশে ফিরে এসেছেন। কিন্তু তারা কবে ফিরতে পারবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। স্পেনে শত শত বাংলাদেশি একই রকম সঙ্কটের মধ্যে আছেন। স্পেন সরকার সীমিত আকারে ববসায় বানিজ্য সচল করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এ নিয়ে দেশটিতে সমালোচানও কম হচ্ছে না। ব্যবসা সচল না হলে বাংলাদেশিদের অসহায়ত্ব আরো বাড়বে।

বৃটেনজুড়ে থাকা লাখ লাখ বাংলাদেশির জীবনে এমন কঠিন সময় অতীতে কখনও আসেনি। প্রায় অর্ধশত বছর ধরে লন্ডনে তাদের বাস। বেশিরভাগ ডুয়েল সিটিজেন। অনেকে অস্থায়ীভাবে আছেন। পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন তরুন-তরুনীর সংখ্যাও একেবারেও কম নয়। তারা পড়েছেন বেশি সঙ্কটে। না ফিরতে পারছেন দেশে না সেখানে কোনো কাজ করতে পারছেন। কাজ হারানোর কারনে অনেকের হাতে নেই কোনো অর্থ। দুর্বিষহ জীবনের মধ্যে আছেন। বৃটেনে লকডাউন কবে খুলবে তাও নিশ্চিত নয়। আশার দিক হচ্ছে জার্মানী ও ফ্রান্সের মতো কিছু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন কোনো রকম রাখঢাক না করেই বলেন, সরি, আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, কঠিন এই সময়ে আমরা আমাদের নাগরিকদের নিয়ে নজর দিতে চাই। কোভিড-১৯ এর এই দুর্যোগে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ছাড়া আর কারো দায়িত্ব নিতে পারছে না সরকার। ফলে এ দেশে যারা অস্থায়ী ভিসা নিয়ে আছেন এবং খরচ নির্বাহের সামর্থ্য নেই, তাঁদের বিকল্প হচ্ছে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া। এরপর বহু বাংলাদেশি আছেন দু:শ্চিন্তায়। দেশে ফিরে আসাও সহজ নয়। সে রকম সামর্থ্য নেই অনেকের।
করোনা উত্তর দুনিয়াতে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানিতে যে বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের ব্যাংকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে রেমিটেন্স প্রবাহ কমছে। গত বছরের ডিসেম্বরে যেখানে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার সেখানে ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ১৪৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। আগামি দিনে এই প্রবাহ আরো কমবে। যা দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটকে আরো ঘনীভুত করবে।