মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইরানের প্রভাব বাড়ানোর পেছনে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন কাসেম সুলায়মানি। সুলায়মানির নেতৃত্বাধীন কুদস ফোর্স ইরানের বাইরে বিভিন্ন সময় যেসব সামরিক অভিযান চালিয়েছি তার মুল ব্যক্তি ছিলেন তিনি। ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসকে বিতাড়িত করার পেছনে সুলায়মানির সবচেয়ে বড় ভুমিকা ছিলো।
ত্রিপলি সরকারের সাথে তুরস্কের যে সামরিক ও নিরাপত্তা চুক্তিটি হয়েছে তাতে করে জঙ্গি নেতা হাফতারের বিজয় প্রায়-অসম্ভব হয়ে উঠেছে, যদিও তার পেছনে আছে মিশর, আরব আমীরাত, ফ্রান্স এবং আরো কয়েকটি দেশ। জঙ্গি নেতার প্রতি তাদের এ সমর্থনকে তুরস্ক বিবেচনা করছে ''ত্রিপলি সরকারের আত্মরক্ষার অধিকারকে অস্বীকার করা'' হিসাবে। এ অবস্থায় ত্রিপলিভিত্তিক জি এনএ সরকারকে সমর্থন দেয়াকেই ন্যায়সঙ্গত মনে করছে তুরস্ক।
এই নতুন জ্বালানিকেন্দ্রিক ভূ-রাজনীতি ছাড়াও উপকূলীয় দেশগুলোর সামনে নতু চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে লিবিয়া ও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ। সন্ত্রাসবাদী বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং রাষ্ট্রবিহীন জঙ্গিদের ক্রমবর্ধমান তৎপরতা, প্রধানত লিবিয়া ও সিরিয়া থেকে ইউরোপ-অভিমুখী শরণার্থীর ঢল এবং একটি আঞ্চলিক সংঘাত লেগে যাওয়ার আশংকা এসব উপকূলীয় দেশের নিরাপত্তার প্রতি নতুন এক চ্যালেঞ্জরূপে হাজির হয়েছে।
ইরান ও তুরস্কের মতো প্রভাবশালী দেশ রাশিয়ার মিত্র হওয়ার কারনে মধ্যপ্রাচ্যে দেশটি অপ্রতিদ্বন্দ্বি শক্তি হিসাবে আর্বিভুত হয়েছে। ফলে সৌদি আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলোর নীতিতে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। যা আগামি দিনে আরো দৃশ্যমান হয়ে উঠতে পারে। পুতিনের সৌদি আরব ও আরব আমিরাত সফরের মধ্যদিয়ে এ অবস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আসলে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার প্রভাব এ অঞ্চলে এক ধরনের ভারসাম্য তৈরি করছে।
বিশ্বের নৌ চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ন বসফরাস ও দার্দেনেলিস প্রনালীর ওপর তুরস্কের কর্তৃত্ব নৌ শক্তির ক্ষেত্রে দেশটির কৌশলগত শক্তি বহুগুন বাড়িয়েছে। ইস্তাম্বুল থেকে উসমানীয় শাসকরা ৭০০ বছর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো শাসন করেছে। এছাড়া পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর ওপর তুরস্কের রয়েছে বিশেষ দূর্বলতা। স্বাভাবিকভাবে এসব দেশের সাথে সর্ম্পকের ক্ষেত্রে তুরস্কের আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করে।