অঢেল বিত্ত, উন্নত নাগরিক জীবন আর শান্তির দেশ ব্রুনাই। আর এর পেছনের মূল কারন হলো ছোট্ট এই দেশটির অফুরন্ত তেল ও গ্যাস সম্পদ। ব্রুনাইয়ে প্রতিদিন উৎপাদিত হয় ১ লাখ ৬৭ হাজার ব্যারেল তেল। অথচ দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ৪ লাক ৪২ হাজার। বার্ষিক মাথা পিছু আয় ৮৩ হাজার ৭৭৭ মার্কিন ডলার। প্রতি দ্ইু জন নাগরিকের এক জনের রয়েছে প্রাইভেট কার। বিপুল পরিমান আয়ের অধিকারি হলেও জনগনের কাউকে কোনো ট্যাক্স দিতে হয় না। উপরন্তু সরকারের পক্ষ থেকে রয়েছে বিনামূল্যের অনেক সেবা। ২০১৯ সালের তালিকায় ব্রুনাই বিশ্বের পঞ্চম ধনী দেশ।
পূর্ব এশিয়ার বর্ণিও দ্বীপের উত্তর তীরে অবস্থিত ব্রুনাই দারুসসালাম । দেশটির উত্তরে দক্ষিন চীন সাগর । এ ছাড়া বাকী তিন দিক মালয়েশিয়ার সারওয়াক প্রদেশের সীমানা। বর্ণিও দ্বীপের একমাত্র স্বাধীন দেশ হলো ব্রুনাই। দ্বীপের বাকি অংশ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার অংশ। পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ হলো বর্ণিও। ব্রুনাইয়ের আয়তন ২ হাজার ২২৬ বর্গমাইল। ২০১৮ সালের হিসেব অনুযায়ী জনসংখ্যা ৪ লাখ ৪২ হাজার। ২০১৯ সালের ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড আাইএমএফ এর শীর্ষ ১০টি ধনী দেশের তালিকায় ব্রুনাইয়ের স্থান পঞ্চম।
দেশটির সরকারি ভাষা মালয়। অধিবাসীদের ৬৬ শতাংশ মালয়, ১০ ভাগ চীনা এবং ২৪ ভাগ অন্যান্য।
নিরঙ্কুশ রাজন্ত্রের দেশ ব্রুনাই। দেশটির একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী সুলতান হাসান আল বলকিয়া। অঢেল প্রাচুর্য রাজপরিবারের বিলাসী জীবন যাপন ছাড়াও সম্প্রতি অন্য একটি কারনে দেশটি বিশ্ব গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষন করে। সেটি হলো শরিয়া আইনের প্রবর্তন।
ব্রুনইয়ের প্রাচুর্যের মূল কারন তেল এবং গ্যাস । তেল এবং গ্যাসের আয়ে দেশটি সম্পদের পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। মানব সম্পদ উন্নয়নে পূর্ব এশিয়ায় সিঙ্গাপুরের পর ব্রুনাইয়ের অবস্থান। আএএমএফ ছাড়াও ফোরবেস তালিকা অনুযায়ী বিশ্বের পঞ্চম ধনী দেশ ব্রুনাই। আর ২০১১ সালে আইএমএফ এর তথ্য অনুসারে বিশ্বে দুটি দেশ রয়েছে যাদের জনগনের ওপর কোনো ঋনের বোঝা নেই। তার একটি হলো লিবিয়া আরেকটি ব্রুনাই।
১৯২৯ সালে ব্রুনাইয়ে তেলের খনি আবিষ্কার হয়। এরপর থেকে সম্পদের পাহাড় জমতে থাকে দেশটিতে তেল গ্যাসের আয় দিয়ে। সাড়ে চার লাখ জনসংখ্যার এ দেশটিতে ১৯৪০ সালে উৎপাদিত হয় ৬০ লাখ ব্যারেল তেল। ১৯৬৫ সালে দৈনিক উৎপাদিত হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৭০০ ব্যারেল তেল। আর বর্তমানে প্রতিদিন উৎপাদিত হচ্ছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ব্যারেল তেল। দক্ষিন পূর্ব এশিয়ায় এটি চতুর্থ বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। তেল ছাড়াও দেশটিতে প্রতিদিন গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে ২৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার।
ধনী এ দেশ ব্রুনাইয়ের শাসকরা সকল নাগরিকদের চিকিৎসা এবং আবাসন খাতে সহায়তা প্রদান করে থাকে। দেশটির প্রয়োজনীয় ৬০ ভাগ খাদ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। ব্রুনাইয়ের প্রতি দুই জন নাগরিকের একজনের প্রাইভেট কার রয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়ির থাকার হার বিশ্বে ব্রুনাই শীর্ষে।
ছোট এ দেশটিতে রয়েছে ১০০ মাইল দীর্ঘ উপকূল রেখা। দেশের পূর্ব অংশ নয়নাভিরাম পাহাড় ঘেরা। রাজধানী বন্দর সেরি বেগওয়ানও পাহাড় ঘেরা একটি শহর । দেশটির অধিকাংশ এলাকা রেইন ফরেস্টে ঘেরা। যে কেউ এ দেশ বা শহর ভ্রমনে যাবে সে দেশটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ না হয়ে পারবে না। দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ বাস করে রাজধানীতে। রাজধানী ছাড়া অপর গুরুত্বপূর্ণ শহর হলো বন্দর নগরী মুয়ারা এবং তেল সমৃদ্ধ শহর সিয়ারা ও কুয়ালা বেলায়েত।
আধুনিক ব্রুনাইয়ের মূল রূপকার সুলতান তৃতীয় ওমর আলী সাইফুদ্দীন । তেলের বিপুল আয় দিয়ে ব্রুনাইয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনা করেন সুলতান তৃতীয় ওমার আলী সাইফুদ্দীন । ১৯৫৩ সালে তিনি প্রথম উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। শিক্ষা, যোগাযোগ এবং অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু করা হয়। নির্মান করা হয় বিমান বন্দর। ১৯৬২ সালে তিনি গ্রহণ করেন দ্বিতীয় উন্নয়ন প্রকল্প। ১৯৬৩ সালে আবিষ্কার হয় একটি বড় ধরনের তেল ক্ষেত্র। তেল এবং গ্যাস উত্তোলনের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়। নির্মান করা হয় গভীর সমুদ্র বন্দর। উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাল্টে যায় দেশের সামগ্রিক চেহারা।
দীর্ঘকাল দেশটি বৃটিশের অধীনে থাকলেও দেশটির রাজতন্ত্র অক্ষুন্ন ছিল। বৃটিশের অধীনে থেকেই তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন।
১৫ থেকে ১৯ শতক পর্যন্ত ব্রুনাই প্রতিষ্ঠিত ছিল সুলতানী সা¤্রাজ্য। ১৮৮৮ সালে ব্রটিশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রুনাইয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ সালে জাপান দখল করে এ দেশ এবং ১০ হাজার জাপানি সৈন্য অবস্থান নেয় সেখানে। ১৯৪৫ সাল পযন্ত জাপানি দখলদার বজায় থাকে। বৃটিশ বা জাপানি দখলদার কেউই অগ্রাহ্য করেননি ৫শ বছরের প্রাচীন এ রাজপরিবারকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর আবার ব্রুনাই বৃটিশের অধীনে আসে । ১৯৮৪ সালে দেশটি বৃটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ব্রুনাই সা¤্রাজ্যের সবচেয়ে নাম করা শাসক সুলতান বলকিয়া। তার সময়ে অর্থাৎ ১৪৮৫ থেকে ১৫২৮ সাল পর্যন্ত বর্তমান সাবা, ম্যানিলা এবং সুলূ দ্বীপপুঞ্জসহ গোটা বর্ণিও দ্বীপ তার অধীনে ছিল।
ব্রুনাই বৃটিশের অধীনে থাকা অবস্থায় সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দীনের নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে শুরু হয় দেশটির সংবিধান প্রনয়ন কাজ। এটিও তিনি বৃটিশ কর্তৃপক্ষের সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে প্রণয়ন করেন। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতা মনোনীত হন তিনি। এ সংবিধান প্রণয়নের পর থেকে ব্রুনাই মূলত স্বাধীনতার দিকে অগ্রসর হয়। প্রতিরক্ষা ও বিদেশ নীতি অর্পিত থাকে বৃটিশ সরকারের হাতে। বাকী সকল বিষয় সুলতান বা ব্রুনাই কর্তৃপক্ষের হাতে ন্যস্ত করা হয়।
১৯৬৭ সালে সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দীন তৃতীয় ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন । উত্তরাধিকার মনোনয়ন করেন বড় পুত্র হাসান আল বলকিয়াকে। ১৯৬৮ সালে ২২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন সুলতান হাসান আল বলকিয়া এবং এখন পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় আসীন ।
পিতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ১৯৭১ সালে সুলতান হাসান আল বলকিয়া সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেন। জন্য। এবার সংবিধান সংশোধন করে ব্রুনাইকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে বৃটেন। ১৯৭৯ সালে আরেক চুক্তি অনুযায়ী সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উপায়ে ১৯৮৪ সালের ১ জানুয়ারিবৃটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
বর্তমানে দেশটি সম্পূর্ণ ইসলামী রাজতন্ত্র নামে পরিচিত যার নাম মালয় ইসলামী মনরারকি। ২০১৩ সালে বর্তমান সুলতান আল বলকিয়া দেশটির ফৌজদারি বিচারের ক্ষেত্রে মুসলমান নাগরিকদের জন্য সম্পূর্ণ ইসলামী শরিয়া আইনের প্রবর্তনের ঘোষনা দেয়। তার এ ঘোষনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখায়। বিবিসির খবরে বলা হয় ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল ব্রুনাইয়ে ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রেপূর্ণ শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করা হয়। তবে নারী পুরুষ এবং সমসম্পর্কের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তি বিষয়ে পশ্চিমা দেশ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসায় সুলতান এ থেকে পিছিয়ে এসেছেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
রাজতন্ত্র হলেও দেশটিতে সংবিধান রয়েছে এবং শাসন ব্যবস্থার অন্যতম ভিত্তি এ সংবিধান। দেশটিকে সংসদ রয়েছে তবে কোনো নির্বাচন হয় না। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৬২ সালে। সুলতান বলকিয়া ২০০৪ সালে ২০ বছর পর আবার সংসদ চালু করেন। ২০ জন সংসদ সদস্য মনোনয়ন করেন। ১৯৫৯ সালে প্রণীত সংবিধান অনুসারে সুলতান হাসান আল বলকিয়া পূর্ণ নির্বাহী ক্ষমতাসহ রাষ্ট্রের প্রধান। পদবীসহ তার পুরো নাম বেশ দীর্ঘ তথা হিজ ম্যাজেস্টি পাদুকা সেরি বাগিন্দা সুলতান হাজী হাসান আল বলকিয়া মুয়াজজাদ্দিন ওয়াদ্দাউলাহ।
ব্রুনাইয়ের রাজতন্ত্র উৎখাত করে একে মালয়েশিয়া ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ১৯৬২ সালে একটি বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে রাজা সুলতান আল বলকিয়া তৃতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন যা আজো অবধি বহাল রয়েছে। এ কারনে অনেকের মতে ব্রুনাইয়ে চালু রয়েছে মার্শাল ল। ব্রুনাইয়ের তেল নগরী সারিয়াতে বর্তমানে নৌঘাটি রয়েছে যুক্তরাজ্যের। দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী সেখানে বৃটিশ সৈন্য রয়েছে।
সুলতান হাসান আল বলকিয়া বর্তমানে ব্রুনাইয়ের ২৯ তম সুলতান। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় রয়েছে এ সুলতানের নাম। ২০০৮ সালে ফোরবসের হিসেব অনুযায়ী তার সম্পদের পরিমান ২০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭ সালে তিনি সিংহাসন আরোহনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করেন। তিনি বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘস্থায়ী শাসক। তার জন্ম ১৯৪৬ সালে। কুয়ালামপুরে প্রাথমিক শিক্ষার পর তিনি ব্রিটিশ রয়াল মিলিটারি একাডেমিতে ভর্তি হন।
কয়েক হাজার ব্যক্তিগত গাড়ি, ইয়াট, ব্যক্তিগত বোয়িং আর বিপুল সম্পত্তি নিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যমে তার সম্পর্কে নানা ধরনের প্রতিবেদন রয়েছে। সুলতানের ভাইসহ রাজ পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যাপক অপচয় আর বিলাসী জীবনের কাহিনী রয়েছে। ২০০০ সালে আদালতের কাগজপত্রে দেখা যায় সুলতানের ভাই প্রিন্স জেফরি বলকিয়া ১০ বছরে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন বিলাসী জিনিসপত্র কেনার পেছনে।
ইন্টারনেটে ব্রুনাই লিখে সার্চ দিলে প্রথমেই ভেসে ওঠে একটি মসজিদের ছবি। এ মসজিদ বর্তমানে ব্রুনাইয়ের প্রতীক। এর নাম সুলতান ওমর আলী সাইফুদ্দিন মসজিদ। ক্ল্যাসিক্যাল এবং আধুনিক স্থাপত্যের সমন্বয়ে নির্মিত বিশ্বের অনন্য সুন্দর মসজিদের মধ্যে অন্যতম এটি। ব্রুনাইয়ের রাজধানী বন্দর সেরি বেগওয়ানের এই মসজিদ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদও গন্য করা হয়। এটি ব্রুনাইয়ের অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষন।
ব্রুনাইয়ের ২৮ তম সুলতান তৃতীয় ওমর আলী সাইফুদ্দিনের নামে এই মসজিদের নাম। তিনিই এর নির্মান শুরু করেন। এটি ব্রুনাইয়ের ইসলামী বিশ্বাসের প্রতীক এবং রাজধানীর সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্থাপত্য। এর নির্মান শেষ হয় ১৯৫৮ সালে। এটিকে আধুনিক ইসলামী স্থাপত্য শিল্পের একটি উদাহরণ হিসেবেও গণ্য করা হয়। মোগল স্থাপত্য এবং মালয় স্টাইল অনুসরণ করা হয়েছে এর স্থাপত্য শৈলীতে। মসজিদের বিশালাকায় প্রধান গম্বুজটি সম্পূর্ণ খাঁটি সোনা দিয়ে মোড়া। আলোকসজ্জার কারনে রাতের বেলায় দূর থেকে পুরো মসজিদটিকে মনে হয় স্বর্ণনিমিত । যেন স্বর্ণের বিশাল এক পাহাড়।
ব্রুনাই নদীর তীরে মানবসৃষ্ট একটি বিশালাকায় লেকের কোলঘেষে অবস্থিত এ মসজিদ। মসজিদের পাশে গাছগাছালি আর ফুলের বাগান, পার্ক মুগ্ধ করে পর্যটকদের। তাছাড়া লেকের মধ্যে স্থাপন করা পাথরের তৈরি রাজকীয় বজরা এবং ব্রিজও আকর্ষণীয় করেছে মসজিদের পরিবেশ। মসজিদের মিনার মার্বেল পাথরের । পাথরের বজরাটি ব্রুনাইয়ের পঞ্চম সুলতান বলখিয়ার রাজকীয় বজরার একটি নমুনা। এ বজরায় অনুষ্ঠিত হয় কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা। ১১৭ ফুট উচু এ মসজিদটি ব্র্রুনাইয়ের রাজধানীর যেকোনো স্থান থেকে দেখা যায়। মসজিদের মিনারে ওঠার ব্যবস্থা রয়েছে পর্যটকদের জন্য। লেকের পাশে দাড়িয়ে দেখলে মনে হয় মসজিদটি যেন ভাসছে যার চারদিকে সাজানো ফুলের বাগান। আকাশে ঝকমক করছে গম্বুজের স্বর্ণের দ্যূতি। শুধু দিনে নয় রাতেও সোনার গম্বুজ চকচক করে মোহ ছড়ায় দর্শকদের মনে। মসজিদের অভ্যন্তরে ব্যবহৃত মার্বেল পাথর, গ্রানাইট, ঝাড়বাতি এবং রঙ্গিন কাচ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
মসজিটির অবস্থান ব্রুনাই নদীর তীরে কামপং আয়ারা গ্রামে। একে পানির মধ্যে অবস্থিত গ্রাম বলা হয়। সব মিলিয়ে কখনো কখনো মনে হয় এটি যেন মসজিদ নয় পর্যটন কেন্দ্র। তবে এটি যে আসলেই একটি মসজিদ তা পর্যটকরা টের পায় যখন নামাজ পড়া ছাড়া কাউকে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না তখন। অশালীন পোশাকেও কাউকে মসজিদ চত্বরে প্রবেশের বিষয়ে কড়াকড়ি রয়েছে।