শুধু অত্যাধুনিক অস্ত্র থাকলেই যুদ্ধ জয় করা যায় না। মোড়লদের বাছ-বিচারহীন মদতেও যুদ্ধ জয় করা সম্ভব নয়। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির অত্যাধুনিক অস্ত্রের অভাব নেই; যুক্তরাষ্ট্রও তাদের নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু স্থল-অভিযানকে সামনে রেখে ইসরায়েল দৃশ্যত বড় একটি পরাজয়ের জন্য অপেক্ষা করছে।
মার্কিন সহায়তায় অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে বিমান হামলা চালিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। হাসপাতাল, মসজিদ, মন্দির, স্কুল- সব গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন তারা। হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। এদের মধ্যে কয়েক হাজার শিশু ও নারী। এটাকে কি আপনি দীর্ঘ মেয়াদে জয় বলবেন?
আপাতত সময়ের জন্য ইসরায়েলের এই পাশবিক হামলা তাদের আত্মতুষ্টি জোগালেও দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহভাবে হেরে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাসের অভিযানের পর ইসরায়েলের পক্ষে পশ্চিমা-বিশে^ কিংবা আরও বড় পরিসরে এক ধরনের সহমর্মিত তৈরি হয়েছিল। হামাসের অভিযান যে দীর্ঘদিনের বঞ্চনা এবং নিপীড়নের স্বাভাবিক ফলশ্রুতি, সেটি বিশ^কে বোঝানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। ইসরায়েল তার আসল চেহারাটা নতুন করে দেখিয়ে প্রমাণ করেছে, হামাস আসলে সঠিক কাজটিই করেছিল। এই পাশবিক নির্মম একটি দেশের বিরুদ্ধে হামাসের মতো অভিযানই প্রয়োজন।
এই নির্বিচার হামলার কারণে বৈশি^ক পরিস্থিতি বেশ দ্রুত ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপও বলছে, যুদ্ধ বন্ধ কর, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহারে হামলা গণহত্যার শামিল, এই হামলা যুদ্ধের নীতিবিরুদ্ধ, ইত্যাদি, ইত্যাদি। বিশে^র কোনো দেশই বস্তুত ইসরায়েলকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দিচ্ছে না। এই হারটা অনেক বড়, এর হারের ক্ষত সহজে সারানো সম্ভব নয়।
হামাসের অভিযানে যে হারটা হয়েছিল ইসরায়েলের, তা তারা ভুলতে পারছে না। ইসরায়েলের আধুনিক অস্ত্রভান্ডার, বিশ^সেরা প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সাফল্যের দম্ভ মুহূর্তেই ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিল হামাস। ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে সেনাঘাঁটিগুলোকে টার্গেট করে যে অভিযান পরিচালনা করেছে প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি, তা তারা ৭৫ বছরেও ধারণা করেনি। এক হাজার চার শতাধিক ইসরায়েলিকে নির্মূল করেছেন তারা। আহত হয়েছেন পাঁচ সহস্রাধিক। প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করেছেন হামাসের যোদ্ধারা। এখন এই জিম্মিদের পুঁজি করে তারা ইসরায়েলকে নাস্তানাবুদ করবেন। এই পরাজয়ের গ্লানি ইসরায়েলকে আর কখনও সইতে হয়নি।
সামনে আরও বড় পরাজয়ের জন্য অপেক্ষা করছে ইসরায়েল। বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে স্থল-হামলার পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চাচ্ছে তারা। এ-নিয়েও ইসরায়েলি প্রশাসনের মধ্যেই বড় মতদ্বৈততা আছে। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপীয় বন্ধুরাও এখন স্থল-অভিযান চাচ্ছে না। পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থল-অভিযানের পরিকল্পনা এখন অনেকটা স্থবির।
যদি এই অভিযান শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখে, কী হবে? ইসরায়েল কি সেখানে জিতবে? অনেক বিশ্লেষক হলফ করে বলেছেন, প্রশ্নই ওঠে না। এটি করতে গেলে আরও বড় পরাজয়ের মুখে পড়তে হবে তাদের। এমনকি, ইসরায়েলের অস্তিত্বও তখন হুমকির মুখে পড়তে পারে।
ইসরায়েলি বিশ্লেষকরাই বলছেন, স্থল-অভিযানের জন্য যে রিজার্ভ সেনাদের জড়ো করা হয়েছে, তারা যুদ্ধের জন্য মানসিকভাবে তৈরি নন; এ-ধরনের অভিযানের জন্য প্রশিক্ষিতও নন। অন্যদিকে, টানেলের ভেতর থেকে অদৃশ্য যুদ্ধে অভ্যস্ত হামাস। তারা স্থলযুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রশিক্ষিত। ইসরায়েলি বাহিনী জীবন দেওয়ার জন্য আক্ষরিক অর্থেই প্রস্তুত নন, অন্যদিকে হামাসের যোদ্ধারা মাতৃভূমির জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়াকে তাদের প্রধান কর্তব্য মনে করেন। বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জীবন দেওয়ার জন্যই ফিলিস্তিনে শিশুর জন্ম হয়। এই মৃত্যু তাদের জন্য গৌরবের।
ইরান এরই মধ্যে ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে, স্থল-অভিযান হলে যে-কোনো সময় যে-কোনো পরিস্থিতি হতে পারে। লেবানন থেকে হিজবুল্লাহ অস্ত্র তাক করিয়ে রেখেছে ইসরায়েলের দিকে। ইয়েমেন থেকে হুথিরা মার্কিন ফ্যাসিলিটিতে হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া ও ইরাক থেকেও হামলা হচ্ছে। পশ্চিমতীরে নতুন করে বেকায়দায় ইসরায়েল; সেখানে হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ে যুক্ত হয়েছেন ইসলামিক জিহাদ ও অন্য প্রতিরোধ সংগঠনগুলো। স্থল-অভিযান হলে আগের আবর-ইসরায়েল যুদ্ধগুলোর তিক্ত অভিজ্ঞতা মিসর, সৌদি ও জর্ডানকে যুদ্ধে উস্কে দেবে। ভুলে গেলে চলবে না, ইরান ছাড়াও এই হামাসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু কিন্তু কাতার ও তুরস্ক। তারা এখন অনেক তৎপর; স্থল-অভিযান হলে তাদের চেহারা অন্যরকম হয়ে উঠবে। এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বৈশি^ক তৎপরতায় এরই মধ্যে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া ও চীন। তাদেরকেও তখন ভিন্ন ভূমিকায় দেখা যাবে। আরও বড় বিষয় হলো- আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলেও ফিলিস্তিন ইস্যুতে তারা ইসরায়েলের বিপক্ষে কথা বলছে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে স্থলযুদ্ধ বাঁধলে, এই যুদ্ধের পরিধি শুধু উভয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটা নিশ্চিত। তবুও, সামরিক শক্তির ভারসাম্যটা মিলিয়ে নেওয়া যাক।
ইসরায়েলের রয়েছে বিশে^র অন্যতম বৃহত্তম সম্পদের অধিকারী সামরিক বাহিনী, যাদের ব্যাপকভাবে সমর্থন দিয়ে থাকে ওয়াশিংটন। ব্রিটেনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ, সংক্ষেপে আইআইএসএস-এর তথ্য বলছে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ-এর সদস্য সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার ৫০০। তাদের মধ্যে এক লাখ ২৬ হাজার সেনাসদস্য। এরপর তাদের চার লাখ রিজার্ভ সেনা রয়েছে। হামাসের হামলার পর তাদের মধ্য থেকে তিন লাখ ৬০ হাজার সদস্যকে সীমান্তে জড়ো করা হয়েছে।
ইসরায়েলের কাছে রয়েছে আয়রন ডোম অ্যান্টি-মিসাইল সিস্টেমসহ বিশে^র সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আইআইএসএস বলছে, তাদের প্রায় এক হাজার ৩০০টি ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সাঁজোয়া যান রয়েছে। আছে ৩৪৫টি যুদ্ধবিমান, কামান তৈরির কারখানা, ড্রোন এবং অত্যাধুনিক সাবমেরিন। ঘোষিত পারমাণবিক রাষ্ট্র না হলেও তাদের কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকাটা ওপেন-সিক্রেট। আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, তাদের পরমাণু ওয়ারহেডের সংখ্যা ৯০।
একটি দশ-শালা চুক্তির অধীনে ওয়াশিংটন ইসরায়েলকে প্রতিবছর তিন দশমিক আট বিলিয়ন ডলার অর্থসহায়তা দিচ্ছে। ২০২৮ সাল পর্যন্ত এই সহায়তা দিয়ে যাবে তারা।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন সম্প্রতি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলজুড়ে সম্প্রতি ইরান ও এর প্রক্সি বাহিনীর সাম্প্রতিক তৎপরতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর তিনি ওই অঞ্চলে প্রতিরক্ষা বিভাগকে আরও শক্তিশালী করার বাড়তি কিছু পদক্ষেপের উদ্যোগ নিয়েছেন। অস্টিন বলেন, তিনি বাড়তি কিছু সেনা নির্দেশ পাওয়া মাত্রই মোতায়েন হওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখছেন। তবে এ-সংখ্যা কত, তা বলেননি তিনি।
সঙ্ঘাত শুরুর পর ওয়াশিংটন ইসরায়েলের কাছে বর্ধিত যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ করেছে এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরে দুটি বিমানবাহী রণতরী মোতায়েন করেছে। এর মধ্যে একটি বিশে^র বৃহত্তম রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড এবং আরেকটি ইউএসএস আইজেনহাওয়ার। ওয়াশিংটন বলেছে, শুধু হামাস নয়, এই রণতরী মোতায়েনের উদ্দেশ্য তাদের মিত্র ইরান ও লেবাননের ইসলামপন্থী আন্দোলন হিজবুল্লাহকে প্রতিহত করাও। মার্কিন সামরিক বাহিনী এরইমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে দুই হাজার সেনাসদস্যকে মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে, হামাসের একটি বৈচিত্র্যময় অস্ত্রাগার রয়েছে, যা বহু বছর ধরে কাজ করছে। এর সশস্ত্র বাহিনীকে বলা হয়, ইজ্জেদিন আল-কাস্সাম ব্রিগেডস। ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-এর তথ্য অনুযায়ী, এর সদস্য সংখ্যা ১৫ হাজার। অবশ্য, আরব মিডিয়াগুলো এই সংখ্যা ৪০ হাজার বলে উল্লেখ করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভারী অস্ত্র পেয়েছেন তারা। বিশেষ করে, ইরান, সিরিয়া ও লিবিয়া থেকে এসব অস্ত্র পান তারা। চীন এবং অন্যান্য অঞ্চল থেকে হ্যান্ডগান এবং অ্যাসল্ট রাইফেল সংগ্রহ করেছেন তারা।
স্থানীয়ভাবে তৈরি অনেক অস্ত্রের পাশাপাশি তাদের ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরকও রয়েছে। পশ্চিমা সূত্রগুলো বলেছে, তাদের হাতে যথেষ্ট ড্রোন, মাইন, গাইডেড অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, গ্রেনেড লঞ্চার এবং মর্টার শেল রয়েছে। এর সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও পশ্চিমা সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের মতো ভান্ডার রয়েছে তাদের কাছে।
ইসরায়েল-হামাস সঙ্ঘাত যেহেতু লেবানন সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়েছে, সেদিকেও নজর দিতে হবে। সেখানে ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই হচ্ছে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ-র।
মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সৌফান সেন্টার বলেছে, হিজবুল্লাহ আপাতত যুদ্ধে পূর্ণাঙ্গভাবে নিয়োজিত হচ্ছে না। এর পরিবর্তে মাঝেমধ্যে রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে তারা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর রাশ টেনে ধরতে চাচ্ছে এবং তাদের সম্পদকে সেদিকে নিয়োজিত রাখছে। জনশক্তি এবং চিন্তা উত্তরের সীমান্তে নিয়োজিত করে তেলআবিবের সামর্থ্য দুর্বল করাই আপাতত হিজবুল্লাহ-র উদ্দেশ্য। তবে ইসরায়েল স্থল-অভিযানে নামলে তারা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে নামার ঘোষণা দিয়েছে।
২০২১ সালে হিজবুল্লাহ বলেছিল, তাদের যোদ্ধা-সংখ্যা এক লাখ। তবে, ইসরায়েলি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ বা আইএনএসএস বলেছে, আসল সংখ্যা এর অর্ধেক। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষণ সংস্থা জেনস-এর এলিয়ট চ্যাপম্যানের মতে, হিজবুল্লাহ-র যোদ্ধাদের অধিকাংশ ফুলটাইম যোদ্ধা নন। সংগঠনের ডাক পড়লে সামরিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হন তারা। তিনি উল্লেখ করেন, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে ৪০ হাজার যোদ্ধাকে একত্রিত করেছিল হিজবুল্লাহ। হামাসের মতো তারাও জীবন দিতে কুণ্ঠিত হন না।
হামাস হচ্ছে ইরানের সর্বোচ্চ মদতপুষ্ট। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরান ফিলিস্তিনিদের সমর্থনকে রাষ্ট্রীয় আদর্শের অন্যতম সেরা স্তম্ভে পরিণত করেছে। তবে যুদ্ধে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়া নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মতদ্বৈততা রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ হিসেবে পরিচিত হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীসহ অন্য প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোকে সার্বিক সহায়তা দিয়ে এই যুদ্ধে পূর্ণাঙ্গভাবে জড়িত করবে ইরান।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, অঞ্চলটি এখন উত্তপ্ত বারুদের মতো। তিনি বলেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্র এবং তার প্রক্সি ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিচ্ছি, যদি তারা অবিলম্বে গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা বন্ধ না করে, তবে যে-কোনো সময় যে-কোনো কিছুই ঘটে যেতে পারে। এলাকাটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।’
আইএনএসএস-এর রাজ জিম্মত বলেছেন, ইরানের যুদ্ধে সরাসরি জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কম; কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে তারা কঠোর অবস্থান প্রদর্শন করছেন। তিনি বলেন, ইরানের এই কৌশলে ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ, বিশেষ করে স্থল-অভিযান বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
কিছু বিশ্লেষকের বক্তব্য, হামাসের পরাজয়কে ইরান নিজের পরাজয় হিসেবেই ভাববে। এই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বিস্তারে প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর শক্তি জোরালোভাবে কাজ করছে। আন্দোলনের একটি স্তম্ভ ভেঙে গেলে ইরান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ-কারণে, প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ- যেভাবেই হোক, ইরান ইসরায়েলকে পরাজিত করতে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করবে। নিজের সামর্থ্য তো বটেই, এজন্য তারা চীন-রাশিয়ার কৌশলগত সহায়তাও এই যুদ্ধে টেনে নিয়ে আসবেন।
এখন ইসরায়েল যদি হামাসকে নির্মূলের অভিযানে নামে এবং হামাস যদি তার প্রতিরোধ আন্দোলনের বন্ধুদের নিয়ে তা প্রতিরোধ করে, সেখানেও ইসরায়েলের জয় সম্ভব নয়। আর যদি যুদ্ধের পরিধি বড় হয়? নিশ্চিতভাবে ধরে নেওয়া যায়, তেলআবিব এমন একটি পরাজয়ের স্বাদ পাবে, যা ইসরায়েল-রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে বড় হুমকির মুখে ফেলবে। এই পরাজয়ের ক্ষত সারানোর কোনো পথ আর তাদের থাকবে না।