করোনা ভাইরাস আতঙ্কে কাবু বিশ্ব। ঘরে বন্দি মানুষকে তাড়া করছে দুঃসহ আতঙ্ক। সময় কাটছে শ্বাসরুদ্ধকর। কবে কাটবে এই সঙ্কট?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সঙ্কট এমনি এমনি কেটে যাবে না। এর বিপরীতে লড়াই করতে হবে মানুষকে। আর প্রতিটা লড়াইয়ে চাই যুতসই নেতৃত্ব। কিন্তু করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বনেতাদের কতোজন নিজেদেরকে সত্যিকারের নেতা হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছেন?
না, যারা কাজের চেয়ে কথা বলেন বেশি, তারা ইতোমধ্যেই আস্থা হারিয়েছেন। তীব্র সঙ্কটে নিজেরাও অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই ক্ষেত্রে শক্ত নেতৃত্বের উদাহরণ হিসেবে আনা যায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নাম। তার একটি ভাষণ পাল্টে দিয়েছে গোটা কানাডার পরিস্থিতি।
করোনা মোকাবেলায় সাহসি পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় এসেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কাজের ব্যাপারে ধারণা নিতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কোনো ওয়েবসাইটে যেতে হবে না। পশ্চিমবঙ্গের যে কোনো সংবাদমাধ্যম অনলাইনে খুলতে গেলেই কিছুটা ইঙ্গিত পেয়ে যাবেন। অনলাইনের হোমপেজ খোলার আগেই আপনার চোখের সামনে হাজির হবে রাজ্য সরকারের অর্থবিভাগের দেওয়া একটি প্রচ্ছদ বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনটির শিরোনাম, ‘কোভিড-১৯ প্রতিরোধে আপনার সরকারের পাশে দাঁড়ান’। এই বিজ্ঞাপনে মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। যারা সাহায্য দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তারা সরকারকে নগদ অর্থ, কিছু সামগ্রী অথবা কিছু সেবা দিতে পারেন। বিজ্ঞাপনটিতে জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০০ কোটি টাকার একটি আপদকালীন ত্রাণ তহবিল গঠন করেছে। এই তহবিল থেকে ৪ লাখ পিপিই পোশাক, ২ লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, ২ লাখ এন৯৫ মাস্ক, ৫০ হাজার গ্লাভস, ৩০০টি ভেন্টিলেটর এবং ৩টি ইসিএমও মেশিন কেনার বরাত দিয়েছে। ওইসব সামগ্রী কিনতে সরকারের এই অর্থ পর্যাপ্ত নয়। দরকার হতে পারে আরো। সে কারণেই সাধারণের কাছে সরকারের এই আহ্বান। বিজ্ঞাপনটির ডানপাশে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবি। তার ছবিসম্বলিত বিজ্ঞাপনের এই আহ্বানে কতটা সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, সে বিষয়ে বিডিভিওজের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে মমতার ডাকে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে কতটা সাড়া মেলে সে তথ্য সবার কাছেই আছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গে ‘দিদি’ নামে পরিচিত। ব্যক্তিগত জীবনকে পেছনে রেখে তার কাছে বরাবর গুরুত্ব পায় দেশ। ব্যক্তিগত জীবনে ‘দিদি’ বিয়ে করেননি। কেন?
এই প্রশ্নটি রয়েছে অনেকেরই। কিন্তু এ প্রসঙ্গে খোলাখুলি করে কিছুই স্পষ্ট করেননি ‘দিদি’। তবে রাজনৈতিক লড়াই তাকে ‘লড়াকু’ হিসেবেই পরিচয় এনে দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন অবলম্বন করে নির্মিত হয়েছে একটি সিনেমা। নাম ‘বাঘিনী’। এতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইন্দিরা। পর্দায় ইন্দিরাকে বিয়ের ব্যাপারে একটা ডায়ালগ দিতে দেখা গেছে। ইন্দিরার ডায়ালগে আছে, ‘তুমি বিয়ের কথা বলছো তো? কিন্তু আমার জীবনের লক্ষ্যটা যে মানুষের জন্য কিছু করা।’
বাস্তব জীবনেও মমতার লড়াই মানুষের জন্য। দেশের জন্য। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি যেসব সিদ্ধান্ত নেন, বিরোধীদের মধ্যে এসব নিয়ে সমালোচনা থাকলেও তার সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে খুব একটা দেখা যায় না। আর একজন সৎ নেতাই পারেন দেশের চেহারা বদলে দিতে। দেশের সঙ্কটে রুখে দাঁড়াতে। সম্ভবত সততা আর মানুষের জন্য কাজ করার কারণেই রাজ্যটিতে মমতার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। এই জনপ্রিয়তা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের বামফ্রন্টের শিবির গুঁড়িয়ে দিতে পেরেছেন তিনি। অথচ ওই সরকার ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে গণতান্ত্রিক উপায়ে টিতে থাকা কমিউনিস্ট সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা ব্যাপক আলোচিত হন। তার আলোচনা পেরিয়ে যায় আঞ্চলিক গন্ডি। মোদি সরকারের সঙ্গে তার সরকারের একটা মনস্তাত্ত্বিক লড়াইও শুরু হয়ে যায়। এই লড়াই সাম্প্রদায়িকতা বনাম অসাম্প্রদায়িকের। কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্ত পাশ্চিমবঙ্গে এসে মমতার জনপ্রিয়তার কাছেও হোঁচট খেতে থাকে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে ভারতে প্রাদুর্ভাব হয়েছিলো দাঙ্গার। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি একপেশে সিদ্ধান্ত উগ্র হিন্দু দাঙ্গাবাজদের উসকে দিয়েছিলো। এতে নির্যাতিত হয়েছিলো মুসলমানরা। রক্তাক্ত হয়েছিলো ভারত। দাঙ্গার কিছুদিন আগে ভারত উত্তপ্ত ছিলো আসামের এনআরসি নিয়ে।
আঞ্চলিক নেতা হয়েও ভারতের জাতীয় প্রায় সব ইস্যুতেই সরব ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসির সময় তিনি সোজা জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে যদি এনআরসি করতে হয়, সেটা হবে আমার মৃতদেহের ওপর দিয়ে।’
কেবল রাজনৈতিক বড় বড় সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই নয়, ছোট ছোট বিষয়েও কথা বলেন তিনি। আর কথার চাইতে কাজ করতেই বেশি দেখা যায় তাকে। করোনা ভাইরাসের প্রকোপ নামার পর থেকেই মাঠের লড়াইয়ে নেমে যেতে দেখা গেছে তাকে। ইন্টারনেটে মমতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, তিনি বাজারে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুশীলন করাচ্ছেন। চক দিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে বৃত্ত এঁকে দিচ্ছেন। জানা গেছে, তার আঁকা বৃত্তের মডেল এখন অনুসরণ করছেন পশ্চিমবঙ্গের অনেক মোদি দোকানি। তারা তাদের দোকানের সামনে বৃত্ত এঁকে দিচ্ছেন, ক্রেতারা এসে একেকটা বৃত্ত ভরাট করে দাঁড়াচ্ছেন।
ভারতজুড়ে লকডাউন ঘোষণার পর পর মাঠের কাজে নিস্তার নেই মমতার। তিনি একের পর এক নির্দেশনা দিচ্ছেন। প্রশাসনকে বোঝাচ্ছেন, জনগণকে সচেতন করছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, কৃষকেরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাঠে কাজ করবেন। যারা কাঁচা তরকারি নিয়ে বিক্রি করতে যাবেন, তাদেরকে যেন পুলিশ অযথা হয়রানি না করে।
মহামারির এই সঙ্কট নিয়ে একটি গানও লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গানটি গেয়েছেন ইন্দ্রনীল সেন। তিনি জানালেন, হঠাৎই মুখ্যমন্ত্রীর ফোন করলেন তাকে। জরুরি নির্দেশ দিয়েই ইন্দ্রনীল সেনকে সেদিন সদ্য লেখা একটি গান পাঠিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সুরের একটি ধুন। মমতা লিখেছেন- ‘স্তব্ধ করো, জব্দ করো করোনাকে ভয় পেয়ো না। ভিড় থেকে সব্বাই দূরে থাকো, করোনাকে ছুতে দেবো না’।
মমতা যখন মাঠে, তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন যে কেউ। কয়েকজন ব্যবসায়ী তার কাছে অভিযোগ করেন, নিত্যপণ্যের দোকান খোলা রাখায় থানার পুলিশ তাদের পিটিয়েছে, জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। এতে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়ে যান, ‘পুলিশেরা পাকামো করেছে’। ওরা সব জিনিসপত্র ফেরত দিয়ে যাবে। আর বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা যাবে।
ওয়েলিংটনের একটি পাড়ায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দেখেন, বাজার বন্ধ। কিন্তু পৌরসভার একটি বড় খাঁচায় আটকে আছে শ’খানেক পাখি। তিনি জানতে চান, পাখিদের খাঁচা পরিষ্কার নয় কেন? কিন্তু কোনো সদুত্তর পাননি। বন্ধ খাঁচায় পাখিগুলোর খাবার কে দেবে, এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। পরে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাকে আদেশ দেন, ওগুলোকে আপাতত চিড়িয়াখানায় নিয়ে রাখতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
করোনা মোকাবেলায় মমতা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। এগুলো সঙ্কটের সময়ও পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মমতা ঘোষণা দিয়েছেন, রাজ্যের সবগুলো থানাকে সকল নিত্যপণ্যের হোম ডেলিভারির অনুমতি দিতে হবে। হোম ডেলিভারির জন্য পাস দেওয়া হবে। বাড়িতে বাড়িতে পত্রিকা বিলিতে বাধা নেই। হকারদের কার্ড দেওয়া হবে। সবজিওয়ালা, মুটেদের আটকানো যাবে না। কৃষকদের মাঠে কাজ করতে দিতে হবে। রেশন দোকান যেন ঠিকমতো চলে। দরকার হলে এক মাসের চাল একবারে দিয়ে দেওয়া হবে। দু’মাসের সামাজিক ভাতা একবারে দেওয়া হবে। ফুটপাথবাসীদের জন্য নাইট শেল্পারের ব্যবস্থা করা হয়েছৈ। ডাক্তার-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য হোটেল, গেস্টহাউসে থাকার ব্যবস্থা। পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টি রাখতে দু’টি টাস্ক ফোর্স গঠন হয়েছে। একটা মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে। আরেকটা পুলিশের টাস্ক ফোর্স।
এই যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের ফিরিশতি, তখন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান নরেন্দ্র মোদির কী অবস্থা?
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাজের তুলনা করা অনেকটা বেমানান মনে হলেও ভারতের বাস্তবতা সেটাই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মোদি এবং মমতা মুখোমুখি অবস্থানে। আর সে কারণেই এই দুইজনের তুলনা ব্যাপকভাবে প্রচলিত হয়ে গেছে দেশটিতে। বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে কলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার। প্রতিবেদনটিতে প্রশ্ন তোলা হয়, কী করল দেশের সরকার, কী করল বাংলা? কী করলেন নরেন্দ্র মোদি , কী করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বিশ্লেষণে বলা হয়, চীনের ওহান প্রদেশে যখন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়, তখনি সতর্ক হওয়ার যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছিলো ভারত। সেই সুযোগ হেলায় নষ্ট করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে একে কিছুটা হলেও কাজে লাগিয়েছে রাজ্য সরকার। আনন্দবাজার দাবি করেছে, অবস্থা যখন উদ্বেগ বাড়িয়েছে, তখন ধাপে ধাপে নিজেদের করণীয়গুলো সংহত করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। তার এই সক্রিয় ইতিবাচক ভূমিকাকে সমালোচকরাও অস্বীকার করতে পারছে না।
রোগের বিপদ সম্পর্কে জনগণের সচেতনতা বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে মানুষকে পথ দেখানো যে কোনো সরকারের প্রাথমিক কর্তব্য। প্রশাসনের প্রথম কাজ হলো, রোগ যাতে ছড়াতে না পারে সেই দিকটি যথাসম্ভব নিশ্চিত করা। এই কাজটি নিজেদের মতো করে মোদি-মমতা দু’জনই সেরেছেন। কিন্তু ফারাকটা চোখে পড়ে কর্তব্যের পরবর্তী ধাপগুলোতে। একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও শুধু কিছু কথা আর ঘোষণার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে মাঠের লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছেন মমতা। অন্যদিকে গোটা দেশের কর্ণধার নরেন্দ্র মোদি কাজ করার চেয়ে বলার দিকেই জোর দিয়েছেন বেশি। তিনি মানুষকে সুনির্দিষ্ট কোনো ছক দিতে পারেননি।
জাতির উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদির দু’টি ভাষণের কথাই ধরা যাক। ভারতের মানুষ অপেক্ষায় ছিলো করোনা-মোকাবেলা নিয়ে তার কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনও সহায়তার শুনবে। কিন্তু মোদি প্রথম দফায় জনতা-কার্ফু এবং করোনা-যুদ্ধে শামিল চিকিৎসক, সমাজ ও অন্য সবাইকে খালিমুখে অভিনন্দন জানানোর দিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি অভিনন্দন জানাতে থালা, ঘণ্টা বাজানোর ডাক দিয়ে কর্তব্য শেষ করেছেন। দ্বিতীয় দফায় সারা ভারতে একুশদিন ঘরবন্দি থাকার নির্দেশের সঙ্গে ১৫হাজার কোটির তহবিল ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে সেই তহবিল কীভাবে কোন কোন খাতে কী কী বরাদ্দ, তার পরিষ্কার চিত্র দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয় করোনাখাতে রাজ্যগুলোকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া থেকে শুরু করে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অদ্ভুতভাবে নীরব রয়েছেন মোদি। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়েও তিনি চুপ। করোনায় কারো মৃত্যু হলে তার পরিবারকে চার লাখ টাকা এককালীন সহায়তার ঘোষণা করেও সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মোদি। একইসঙ্গে আক্রান্তদের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার ঘোষণাও তিরিশ মিনিটের মধ্যে তুলে নেওয়া হয়।
আবার তাকানো যাক মমতার দিকে। তিনি কিন্তু বহু আগেই পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংশ্লিষ্ট সেবার সঙ্গে জড়িত সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী-সহ সংশ্লিষ্ট সবার জন্য পাঁচ লাখ টাকা করে বিমা চালু করেছেন। প্রথম ধাপেই গড়া হয়েছে দুইশো কোটি টাকার তহবিল। গড়া হয়েছে বিশেষ ত্রাণ তহবিলও। বিনামূল্যে চিকিৎসা হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে। মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও-বৈঠকে মমতা দ্রুত রোগ নির্ণয়ের জন্য রাজ্যে করোনা-পরীক্ষাগার বাড়ানোর কথা তুলেন। এতে কয়েকটির অনুমোদন পান। তবে কেন্দ্র থেকে রোগ পরীক্ষার প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিট পেতে সময় লেগে যায়। শুধু তা-ই নয়, যারা দ্ইু টাকা কেজি চাল পান, সেই কয়েক কোটি উপভোক্তাকে আগামী ছয় মাস বিনামূল্যে চাল দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন মমতা।
কেবল মমতা নন, তার দল তৃণমূলের নেতাদেরও দেখা যাচ্ছে মাঠের লড়াইয়ে সক্রিয়। অন্যদিকে কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা ভারতীয় জনতা পার্টির অনেক নেতা মাঠে-ময়দানে গোমূত্র খাওয়া আর গোবর মাখার দাওয়াই দিয়ে বেড়াচ্ছেন।